আমেরিকা , মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫ , ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাগিনাউ ব্যাংকে জাল চেক ঘিরে জিম্মি পরিস্থিতি, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু মিশিগানে ড্রাগের অন্ধকার জগতে কারফেন্টানিল নামক নীরব ঘাতক পশ্চিম মিশিগানে ছোট বিমান দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত পূর্ব ডেট্রয়েটের শিল্প কারখানায় আগুন : নিয়ন্ত্রণে এনেছে দমকল বিভাগ ডেট্রয়েটে বন্দুক সহিংসতা অব্যাহত : কিশোর নিহত, বোন গুরুতর আহত মেট্রো ডেট্রয়েটে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা আজ পন্টিয়াকে শিশু নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনা : পিতা কারাগারে পন্টিয়াকে গাড়ি চুরির অভিযোগে ১২ বছর বয়সী এক কিশোর গ্রেপ্তার ডেট্রয়েটে ইন্টারস্টেট ৯৪-এ  দুটি গাড়ির  সংঘর্ষে যুবক নিহত একই রশিতে হাত, হ্যামট্রাম্যাক রথে মানুষের মেলবন্ধন মুরাদনগরে ধর্ষণ মামলার মূল আসামি ফজর আলী রাজধানী থেকে গ্রেফতার ডেট্রয়েটের আকাশ থেকে ডলারের বৃষ্টি ডেট্রয়েটে গুলির ঘটনায় ৪ বছর বয়সী শিশুসহ দুইজন নিহত মেট্রো ডেট্রয়েটে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে এশিয়ান-হিস্পানিক প্রভাব ডেট্রয়েটের কিছু এলাকায় বিবর্ণ জল, সমাধানে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ ওয়েইন স্টেট ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে মামলা ভ্যান বুরেন টাউনশিপে নির্বিচারে গুলি, মাতাল অবস্থায় এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার গরমে ঘাম, খরচে চাপ—তবু কাল জমবে জোব্বি নুনার উৎসব একাত্তরের ইয়াহিয়ার পথেই চলছে আজকের অবৈধ সরকার ডেট্রয়েট নদী থেকে ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার
এক ঐতিহ্যের স্মৃতিচারণ ও মূল্যায়ন

লোকজ সংস্কৃতির জীবন্ত দলিল : পটচিত্র

  • আপলোড সময় : ২২-০৪-২০২৫ ১২:৫০:১০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৪-২০২৫ ১২:৫০:১০ পূর্বাহ্ন
লোকজ সংস্কৃতির জীবন্ত দলিল : পটচিত্র
ওয়ারেন, ২২ এপ্রিল : গত রোববার নগরীর শিবমন্দিরে “পটচিত্র” পরিবেশনা দেখতে গিয়ে হঠাৎই মনে পড়ে গেল আমার ছোটবেলার কিছু অস্পষ্ট স্মৃতি। আমার যতদূর মনে পড়ে, গ্রামের মেলায় বা বর্ষাকালে মানুষের যখন কিছুই করার থাকত না, তখন বেশ কয়েকবার “পটচিত্র” বা “পটের গান” দেখার সুযোগ হয়েছিল। সে সময় এটাকে কেউ কেউ “পটের গান” বলত, কেউ বলত “পটুয়ার গান”—তবে নামের চেয়ে তা ছিল এক অপূর্ব অভিজ্ঞতা। একটানা গাওয়া গান, তার সঙ্গে ঝুলে থাকা চিত্রের সারি আর শিল্পীর আবেগময় গল্প বলা—এই সমন্বয় ছিল যেন এক ভ্রাম্যমাণ মঞ্চনাটক।
শিবমন্দিরের মঞ্চে যখন পৃথা দেব তার কণ্ঠে পটচিত্রের গান পরিবেশন করছিলেন, আর সেই গান অনুসারে একের পর এক ছবি ভেসে উঠছিল, আমি যেন ফিরে গেলাম আমার হারানো শৈশবে। এমন সাবলীল গায়কী, এমন জীবন্ত উপস্থাপনা সত্যিই অতুলনীয় ছিল।
“পটচিত্র” বাংলার অন্যতম প্রাচীন লোকজ শিল্পরূপ, যা একাধারে চিত্রশিল্প, সংগীত, ও গল্পবলা—তিনটির এক অপূর্ব সংমিশ্রণ। “পট” মানে কাপড় বা ক্যানভাস, আর “চিত্র” মানে ছবি।
এই শিল্পে সাধারণত এক টুকরো লম্বা কাপড়ে ধারাবাহিকভাবে আঁকা হয় কাহিনীভিত্তিক ছবি, এবং সেই ছবিগুলোর ব্যাখ্যা দিয়ে শিল্পী গান গেয়ে যান—এভাবেই দর্শক একসঙ্গে দেখতে পান ছবি ও শুনতে পান কাহিনী। পটচিত্রের সূচনা খ্রিস্টপূর্ব যুগের ভারতীয় লোকশিল্প থেকে বলে মনে করা হয়। বাংলায় এই শিল্পের প্রচলন প্রাক-মুসলিম যুগ, অর্থাৎ ৭ম বা ৮ম শতাব্দী থেকেই দেখা যায়। এটি বিশেষভাবে জনপ্রিয় ছিল ভারতের মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম ও বাংলাদেশের যশোর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, রাজশাহী অঞ্চলে। 
প্রধান বিষয়বস্তু হিসেবে রামায়ণ, মহাভারতের কাহিনী, মনসামঙ্গল, ধর্মমঙ্গল ও অন্যান্য মঙ্গলকাব্য, সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক বার্তা, সমসাময়িক দুর্যোগ বা সামাজিক বার্তা (যেমন প্লেগ, বন্যা, সামাজিক অনাচার ইত্যাদি)
পটচিত্র তৈরি ও উপস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন পটুয়া বা পটগায়েন। তাঁরা ছবি আঁকার পাশাপাশি গান গেয়ে সেই ছবির ব্যাখ্যা দেন। পটুয়াদের মধ্যেও ধর্ম-বর্ণের বিভাজন ছিল না—হিন্দু, মুসলিম, দলিত সবাই ছিলেন এই ঐতিহ্যের অংশ। এমনকি মুসলিম পটুয়ারা হিন্দু পুরাণ নির্ভর কাহিনী আঁকতেন—এটাই এই শিল্পের উদারতা ও অন্তর্ভুক্তির চিহ্ন।
কালের প্রবাহে পটুয়াদের অনেকেই পরবর্তীতে রিকশার পেছনে আঁকা শিল্পকলার মাধ্যমে তাঁদের সৃষ্টিকে আধুনিকরূপে নতুন করে উপস্থাপন করেন, যা “রিকশা আর্ট” নামে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। ১৯৫০–৬০-এর দশক পর্যন্ত বাংলাদেশে গ্রামীণ মেলা, ধর্মীয় উৎসব ও সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতে পটচিত্র দেখা যেত ব‍্যপক ভাবে, তবে ৯০ দশকের শুরু পর্যন্ত ধুঁকতে ধুঁকতে বেঁচে ছিল লোকজ সংস্কৃতির জীবন্ত দলিল।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
ফ্ল্যাক্স এন গেইট ডেট্রয়েটে পশ্চিমা থিমে জমকালো ওপেন হাউস

ফ্ল্যাক্স এন গেইট ডেট্রয়েটে পশ্চিমা থিমে জমকালো ওপেন হাউস